আচ্ছা, আপনি কি জানেন? যে আপনি একজন ডিজাইনার! একটা কথা, এখন অনেকেরই মনে প্রশ্ন জাগতে পারে ‘এটা কীভাবে সম্ভব? আমি তো কখনোই ডিজাইন করিনি।’
আমরা সবাই কম বেশি কিছু ডিজাইন করে থাকি। সেটা হোক কোনো অ্যাসাইনমেন্টের কভারপেজ করার সময় বা পাওয়ার-পয়েন্টে স্লাইড বানানোর সময় অথবা রং-তুলি দিয়ে কাগজে আঁকার সময়। আর এসব ডিজাইন করার সময় নিজের অজান্তেই আপনি কিছু না কিছু ভুল করে থাকেন।
আমেরিকার একজন বিখ্যাত সাবেক প্রধানমন্ত্রী উইনস্টন চার্চিল বলেছিলেন,
“সব মানুষ ভুল করে কিন্তু শুধু মাত্র জ্ঞানী মানুষেরা তাদের ভুল থেকে শিক্ষা নেয়। ”
– উইনস্টন চার্চিল
তাহলে, আজ জানা যাক কীভাবে আপনি এসব ভুলগুলোকে সংশোধন এবং জ্ঞানী মানুষদের মতো সেই ভুলগুলো থেকে শিক্ষা নিতে পারবেন।
যখন আমরা খাতায় কোন কিছু লিখি তখন কি কখনো লেখার কিছু অংশ খাতার উপরে, কিছু খাতার নিচে কিংবা ডানে বা বামে লিখি? অবশ্যই নাহ!
আমরা লেখার সময় সব লেখা এক সারিতে লিখে থাকি। তাহলে ডিজাইন করার সময়ও আপনি ঠিক একই কাজই করবেন। ডিজাইনে লেখার সব অ্যালাইনমেন্ট – লেফট বা রাইট অথবা মিডেল অ্যালাইনমেন্টে দিলে সেটা সুন্দর দেখাবে।
প্রত্যেক ডিজাইনের মূল লক্ষ্য হচ্ছে, এটার মাধ্যমে যে বার্তা পোঁছানো হচ্ছে তা যেন মানুষ ঠিকভাবে বোঝে সেটা নিশ্চিত করা। এই জন্য ব্যাকগ্রাউন্ড কালার এবং মানানসই টেক্সট ব্যবহার করার গুরুত্ব অনেক। আমরা অনেক সময়ই ফন্টসের কালার এমন দেই যা ব্যাকগ্রাউন্ডের সাথে প্রায় এক হয়ে যায় আবার ব্যাকগ্রাউন্ডের কালার এমন দেই যা ফন্টসের সাথে প্রায় এক হয়ে যায়। যার ফলে টেক্সট-এ কি লেখা আছে তা বোঝা যায় না।
তাই ব্যাকগ্রাউন্ড এবং ফন্টস এ কালার দেওয়ার সময় ডিজাইনের লেখা যাতে বোঝা যায় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। এর জন্য সাধারণত ব্যাকগ্রাউন্ডের কালার “লাইট” এবং ফন্টসের কালার “গাঢ়” অথবা ফন্টসের কালার “লাইট” এবং ব্যাকগ্রাউন্ডের কালার “গাঢ়” রাখা ভাল।
মনে করুন, আপনাকে একটা কাগজ দেওয়া হলো। আপনি আর বন্ধুরা মিলে সেখানে লিখলেন
“আমাদের ম্যাগাজিনে কি কি টপিক থাকবে এবার?”
কিন্তু “আমাদের” শব্দটা একজন লিখলো, “ম্যাগাজিনে” শব্দটা আরেকজন লিখলো এভাবে সবাই মিলে এক একটি শব্দ লিখতে থাকলো। সবার লেখার পর দেখা যাবে যে “আমাদের ম্যাগাজিনে কি কি টপিক থাকবে এবার?” বাক্যটি দেখতে অসামঞ্জস্য লাগছে।
কিন্তু কেন? এর মূল কারণ হচ্ছে, আপনার এক এক বন্ধুদের হাতের লেখা একেক রকম।
ঠিক একই জিনিসই ঘটে যখন আমরা কোনো ডিজাইনে অনেকগুলো ফন্টস ব্যবহার করি। এখানে লক্ষ্য রাখার বিষয় হচ্ছে, ডিজাইনে ২-৩ টার বেশি ফন্টস ব্যবহার না করা।
প্রয়োজনে ২-৩ টার বেশি ফন্টস ব্যবহার না করে একই ফন্টসকে বোল্ড, ইটালিক অথবা আন্ডারলাইন করে আমাদের ডিজাইনটিকে প্রয়োজন মত সাজিয়ে নিতে পারি।
সকল ডিজাইনেই কম-বেশি, কিছু না কিছু ভিজুয়াল ইলিমেন্ট হিসেবে ছবি যোগ করতে হয়। এক্ষেত্রে একটা কমন ভুল হচ্ছে, এইচডি ছবি ব্যবহারের কথা ভুলে যাওয়া। যার ফলে ছবি কোথাও পোস্ট দেওয়ার পর দেখা যায়, সেটা ফেটে গেছে অথবা ঘোলা হয়ে গিয়েছে। তাই সবসময় ডিজাইনে ছবি ব্যবহার করার সময় এইচডি ছবি ব্যবহার করার কথা মাথায় রাখবো। কপিরাইটবিহীন ছবি পাওয়ার জন্য এই সাইটটির সাহায্য নিতে পারেন।
ছবি যোগ করার সময় আরো একটি জিনিস খেয়াল রাখতে হবে যে আমরা যখন ছবিটি কে বড় অথবা ছোট করব তখন যেনো শিফট-কী ধরে রেখে ছবিটির সাইজ বড় অথবা ছোট করি।
ডিজাইনের বিভিন্ন কাজে আইকনের প্রয়োজন হয় আর এ ক্ষেত্রে সচরাচর যে ভুলটা হয় তা হচ্ছে ক্লিপ-আর্টের ব্যবহার, যা মোটেও উচিত নয়। এটা ডিজাইনকে আন-প্রফেশনাল এবং অসামঞ্জস্য করে তোলে। তাই সবসময় ডিজাইনে ক্লিপআর্টের পরিবর্তে ফ্ল্যাট আইকন ব্যবহার করা উচিত। ফ্ল্যাট আইকন আমাদের সম্পূর্ণ ডিজাইনটিকে সুন্দর এবং প্রফেশনাল করে তোলে।
বিভিন্ন ধরনের সুন্দর ফ্ল্যাট আইকন পাওয়ার জন্য এই সাইটে ঘুরে আসতে পারেন।
যখন কোন ডিজাইন আমরা প্রিন্ট করতে দেই তখন দেখা যায় যে, আমরা যেই কালার দিয়ে ডিজাইনটা করেছিলাম সে কালারটা প্রিন্ট করার পর ডিস্কালার হয়ে গিয়েছে। এর কারণ হচ্ছে প্রিন্টের ফরম্যাটের ভুল ছিলো।
এখানে খেয়াল করার বিষয় হচ্ছে, কোনো ফাইল প্রিন্ট করার সময় সেটাকে “সি ওয়াই এম কে (CYMK)” ফরম্যাটে এবং ওয়েবে পোস্ট করার সময়ে “আর জি বি (RGB)” ফরম্যাটে আউটপুট সেভ করতে হবে।
অনেক সময় ডিজাইনে অনেক লেখার প্রয়োজন পড়ে। এতে করে সমস্যা হয় যে, অডিয়েন্স অনেকেই ডিজাইনের লেখাটা না পড়েই (বা স্কিপ করে) চলে যায়। তাই ডিজাইন করার সময় সবসময় চেষ্টা করবেন অল্প লেখার মাধ্যমে ডিজাইনের মূল বিষয়টিকে ফুটিয়ে তুলতে।
আশা করি এই প্রকাশনাটি পড়ে কিছুটা হলেও জানতে পেরেছেন। তাই এখন থেকে এইসব ছোটখাটো ভুলের কথা মনে রেখে আপনার ডিজাইনগুলোকে আরও সুন্দর করে ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করুন।
কৃতজ্ঞতাঃ এই লেখাটি যার অবদান ছাড়া সম্পূর্ণ হতো না – সাদিয়া হাসান (বিশেষভাবে ধন্যবাদ)
এই লেখাটি সম্পাদনা করা হয়েছে এপ্রিল ২২, ২০২০ ৬:৪৯ অপরাহ্ন
প্রোগ্রামিং শুরু করার আগে একটি প্রচলিত লাইন যা প্রায় সকল বিগিনারদের শুনতে হয়- "প্রোগ্রামিং খুব…
ডেনো কি? ডেনো হচ্ছে জাভাস্ক্রিপ্ট ও টাইপস্ক্রিপ্টের একটি সিকিউর রানটাইম, এটি জাভাস্ক্রীপ্টের V8 ইঞ্জিন এবং…
অনেকেরই ধারণা ইন্টারনেট মানে একটি ম্যাজিকেল ক্লাউড যা আমাদের পছন্দের ওয়েবসাইট, অনলাইন শপ এবং অন্তহীন…
ওয়েবের ৭৮.৯% ওয়েবসাইটই পিএইচপি তে রান হওয়া স্বত্বেও এটি ভবিষ্যতের ইকোসিস্টেমের সাথে যাচ্ছেনা। বিশেষ করে…
আমরা প্রত্যেকেই কম বেশি বিভিন্ন প্রয়োজনে সফটওয়্যার, ওয়েবসাইট এবং ওয়েব অ্যাপ ব্যবহার করে থাকি। এসকল…
ম্যালওয়্যার! বর্তমান সময়ে আসলেই একটি ভয়ের বিষয় হয়ে দাড়িয়েছে। বড় টেক কোম্পানী থেকে ছোট পার্সোনাল…