বর্তমান সময়ে আমরা যেসব স্মার্টফোন ব্যবহার করি তার অধিকাংশই এন্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেম দ্বারা পরিচালিত। কিন্তু আমরা যদি মোবাইল ফোনের ইতিহাসের আরো পেছনে তাকাই, তবে জানতে পারবো ঐ ফোন গুলো জাভা অপারেটিং সিস্টেমে পরিচালিত হতো। তখনকার মোবাইল ফোন এখনকার মতো এতোটা স্মার্ট ভাবে কাজ করতে পারতো না। সময়ের বিবর্তনে আমাদের জীবনকে আরো সহজ করে তুলেছে নতুন সব প্রযুক্তি, প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ ও ইনোভেশন।
তাই আজকে আমাদের মূল আলোচনা দুটি প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ নিয়ে। যারা তাদের স্ব স্ব অবস্থান থেকে প্রযুক্তি এবং সফটওয়্যার ইন্ডাস্ট্রির পূর্বের সব ধারণাই পাল্টে দিয়েছে। আপনারা নিশ্চই ইতিমধ্যে জেনে গিয়েছেন এই প্রকাশনায় জাভা এবং কটলিন নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। এবং এদের মধ্যে বিভিন্ন পার্থক্য বের করে তা আপনাদের সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করবো।
জাভা এবং কটলিন প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজের পেছনের ইতিহাস
জন বেকাস ১৯৫৭ সালে ‘ফরট্রান’ (FORTRAN
) নামের একটি প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ আবিষ্কার করেছিলেন গাণিতিক, পরিসংখ্যান সংক্রান্ত কাজের জন্য। এরপর পর্যায়ক্রমে সময়ের সাথে নতুন সব প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ আবিষ্কার হতে থাকে।
১৯৯৫ সালে জাভার আগমনের মাধ্যমে প্রযুক্তির দুনিয়াতে নতুন যুগের সূচনা হয়। জাভার মধ্যে কিছু অনন্য বৈশিষ্ট্য ছিল, যা তখনকার অন্যান্য প্রোগ্রামিং ভাষার মধ্যে ছিল না। এর পরে আরো অনেক প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ এসেছে যেমন- R, Go, Rust
ইত্যাদি। এতো সব প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ চলে আসার পরেও প্রযুক্তি দুনিয়ায় জাভার প্রতিদ্বন্দ্বী কেউই হতে পারেনি এবং জাভার মার্কেট ভ্যলুও ছিলো আকাশচুম্বী।
কেননা, এন্টারপ্রাইজ লেভেলের ওয়েব অ্যাপ্লিকেশন সহ সব ধরণের সফটওয়্যার জাভা দিয়েই ডেভেলপ করা হতো। তাছাড়া, এন্ড্রয়েড অ্যাপ্লিকেশন তৈরিতেও জাভাই ডেভেলপারদের অন্যতম পছন্দনীয় প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ ছিল।
কিন্তু, জাভার এই একচ্ছত্র দাপট শেষ হতে সময় লেগে যায় প্রায় একযুগ।
২০১৭ সালে Google I/O কনফারেন্সের মাধ্যমে সকলের সামনে একটি নতুন প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ উম্মোচন করে আর সেটি হলো কটলিন প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ। গুগলের এমন ঘোষণা পাওয়ার পরই ডেভেলপাররা কটলিন নিয়ে স্টাডি শুরু করে দেয়। জানার চেষ্টা করে এর কি কি বিশেষত্ব রয়েছে এবং আসলেই কি কটলিন জাভাকে ছাড়িয়ে যেতে পারবে?
“জাভা” একটি অবজেক্ট ওরিয়েন্টেড প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ
১৯৯৫ সালে “সান মাইক্রোসিস্টেমস” জাভা আবিষ্কার করেছিল কিন্তু পরবর্তীতে ওরাকল এর সত্ত্বাধিকার কিনে নেয়। জাভার জনপ্রিয়তার অন্যতম কারন হল জাভা একটি অবজেক্ট ওরিয়েন্টেড প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ।
জাভা দিয়ে খুব সহজেই একটি সফটওয়্যারে অবজেক্ট ক্রিয়েট করা এবং সেটা ব্যবহার করা সম্ভব যা অন্যান্য প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ গুলোতে অনেক জটিল। এন্টারপ্রাইজ লেভেল সফটওয়্যার ও এন্ড্রয়েড অ্যাপ্লিকেশনের ব্যাক-এন্ড ডেভেলপমেন্টে জাভা ব্যাপক ভাবে ব্যবহার করা হয়।
“কটলিন” একটি স্ট্যাটিকেল টাইপ প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ
কটলিন জাভার তুলনায় বেশ নতুন একটি প্রোগ্রামিং ল্যাংগুয়েজ । সর্বপ্রথম ২০১১ সালে “JetBrains
” (সফটওয়্যার কোম্পানি) প্রোজেক্ট কটলিন” উন্মোচন করে। এবং ২০১৭ সালে হটাৎ করেই গুগল সবার সামনে কটলিন’কে পরিচয় করিয়ে দেয় এবং ডেভেলপারদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে।
এরপরে ২০১৮ সালে Google I/O ইভেন্টে গুগল অফিশিয়ালি এন্ড্রয়েড ডেভেলপমেন্ট ল্যাংগুয়েজ হিসেবে কটলিনকে বাছাই করার ঘোষণা দেয়। ২০২০ সাল থেকে কটলিনই হবে এন্ড্রয়েড ডেভেলপমেন্টের জন্য প্রাইমারি ল্যাংগুয়েজ। কটলিন একটি স্ট্যাটিকেল প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ যা JVM
(জাভা ভার্চুয়াল মেশিন) এর ওপর ভিত্তি করে জাভা ও C++
এর মতোই কাজ করে। এটি জাভাস্ক্রিপ্ট, এন্ড্রয়েড ও নেটিভ কোড কম্পাইল করতে পারে এবং iOS
এ কোড রান করতে পারে।
জাভা ও কটলিন এর মধ্যে ব্যাসিক কিছু পার্থক্য যা আপনার জানা প্রয়োজন:
বিষয়বস্তু | জাভা | কটলিন |
---|---|---|
ফাংশনাল প্রোগ্রামিং | জাভা ৮ (ভার্শন) আসার আগ পর্যন্ত এটি ফাংশনাল প্রোগ্রামিং সাপোর্ট করতো না। কিন্তু এন্ড্রয়েড অ্যাপ ডেভেলপের ক্ষেত্রে জাভার সাবসেট ফিচার ফাংশনাল প্রোগ্রামিং এর মতো কাজ করে। | কটলিন হলো প্রসিডিউরাল এবং ফাংশনাল প্রোগ্রামিং এর মিক্স একটি প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ। কটলিনে বিভিন্ন ফাংশন যেমন, lambda, Operator overloading, Higher-order Functions, Lazy evaluation ইত্যাদি অটোমেটিক্যালি বিল্ড-ইন করা থাকে। |
ডেটা ক্লাস | জাভায় একটি ক্লাসে ডেটা রাখার ক্ষেত্রে কন্সট্রাক্টর এবং ভ্যরিয়েবলে গেটার ও সেটার মেথডে hashcode(), toString(), equal() ফাংশন ডিক্লেয়ার করে ডেটা স্টোর করতে হয়। | কিন্তু কটলিনে একটি ক্লাসে ডেটা রাখার ক্ষেত্রে ক্লাস ডেফিনেশনে কি-ওয়ার্ড “data” লিখলেই ডেটা স্টোরের সব ফাংশনালিটির কাজ হয়ে যায়। |
এক্সটেনশন ফাংশন | জাভায় কোনো ক্লাসে ফাংশন এক্সটেন্ড করতে চাইলে নতুন ক্লাস ক্রিয়েট করতে হয় এবং প্যারেন্ট ক্লাসের সাথে ইনহেরিটেট করতে হয়। তাই বলা যায় জাভায় এক্সটেনশন ফাংশন নেই। | কটলিন দিয়ে নির্দিষ্ট কোনো ক্লাসে ফাংশন এক্সটেন্ড করা যায়। |
টাইপ ইনফারেন্স | জাভা ভ্যারিয়েবল ডিক্লেয়ারের ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্টভাবে ঐ ভ্যারিয়েবলকে উল্লেখ করে নিতে হয়। | কিন্তু কটলিনে সুনির্দিষ্টভাবে ঐ ভ্যারিয়েবলকে উল্লেখ না করলেও নির্দিষ্ট এ্যাসাইনমেন্ট হ্যান্ডেল করে। |
নাল সেফ | এটি ইউজারকে যে কোনো ভ্যারিয়েবলে নাল ভ্যালু রাখতে দেয় কিন্তু কোনো অবজেক্টের রেফারেন্স পেলে নাল ভ্যালু নাল পয়েন্টার হয় এবং ইউজার সেটা হ্যন্ডেল করে। | কটলিনে ডিফল্টভাবেই সব ধরনের ভ্যারিয়েবল নন-নালেবল। তাই যে কোনো অবজেক্ট/ভ্যারিয়েবলে নাল ভ্যালু এসাইন করা যায় না। |
নো চেকড এক্সপেক্টেশন | জাভায় চেক এক্সপেক্টেশনের মাধ্যমে কোডের ইরর হ্যান্ডেল করা হয়। | কিন্তু কটলিনে চেক এক্সপেক্টেশন নেই তাই ডেভেলপারদের এক্সপেক্টেশন ডিক্লেয়ার করার কোনো অপশন নেই। |
জাভা ও কটলিন এর মধ্যে মূল পার্থক্য গুলো নিম্নরুপ:
এক্সটেনশন ফাংশন ()
জাভাতে যদি কোন ক্লাস (ক) এর বৈশিষ্ট্য, অভ্যন্তরীণ ভ্যারিয়েবল অন্য কোন ক্লাস (খ) ব্যবহার করে থাকে, তাহলে যেই ক্লাস এর বৈশিষ্ট্য ব্যবহার করা হচ্ছে (ক) তাকে বলা হয় প্যারেন্ট ক্লাস এবং যেই ক্লাস প্যারেন্ট ক্লাস এর বৈশিষ্ট্য ব্যবহার করে তাকে চাইল্ড ক্লাস বলা হয়।
জাভাতে কোন প্যারেন্ট ক্লাস এর ফাংশনালিটি (অভ্যন্তরীণ ভ্যারিয়েবল) ব্যবহার করতে চাইলে আমাদেরকে একটা চাইল্ড ক্লাস বানাতে হয় এবং প্যারেন্ট ক্লাসকে ইনহেরিট করতে হয়।
কটলিন এ ডেভেলপাররা কোনো ক্লাস এর মধ্যে কোনো বিশেষ ফাংশনালিটি যোগ করতে চাইলে এক্সটেনশন ফাংশন ব্যবহার করতে পারে, কিন্তু এই সুবিধা জাভাতে নেই। ফলে, আর নতুন করে প্যারেন্ট আর চাইল্ড ক্লাস ডিক্লেয়ার করার প্রয়োজন পরে না।
চলুন, একটি উদাহনের মাধ্যমে বিষয়টা বুঝে আসি –
class Vehicle
{
protected String name = "গাড়ি";
protected String city= "ঢাকা";
protected String country = "বাংলাদেশ";
}
এখন, এই ক্লাস এর ভিতরের সব কিছু ব্যবহার করতে চাইলে আমাদেরকে একটি চাইল্ড ক্লাস বানিয়ে Vehicle
ক্লাস কে ইনহেরেট করতে হবে ।
class Car extends Vehicle //Car ক্লাস extend করার মাধ্যমে Vehicle ক্লাস এর ভিতরের ভ্যারিয়েবল ব্যবহার করতে পারবে
{
public static void main(String[] args)
{
Car mycar = new Car(); // Car ক্লাস এর একটা অবজেক্ট বানালাম mycar নামে।
System.out.println(toyota.name + “ “ + toyota.city + ” “ + toyota.country); // প্যারেন্ট ক্লাস এর name, city, country স্ট্রিং ব্যবহার করা হয়েছে।
}
}
এভাবে জাভাতে এক ক্লাস এর ভ্যারিয়েবল অন্য ক্লাসে ব্যবহার করা যায় নতুন ক্লাস বানিয়ে আগের ক্লাসকে extend
করার মাধ্যমে; যা কিছুটা জটিল এবং সময় সাপেক্ষও বটে।
কিন্তু কটলিনে কোনো ক্লাস এর ভিতরের ভ্যারিয়েবল ইউজ করার জন্য চাইল্ড ক্লাস ডিক্লেয়ার করার কোনো প্রয়োজন পরে না। এই কাজটি করার জন্য কটলিনে “এক্সটেনশন ফাংশন” রয়েছে।
উদাহরণ –
class Vehicle (val height: Double, val width: Double){
fun area(): Double{ // প্যারেন্ট ক্লাস এর ফাংশন যার টাইপ Double
return height*width;
}
}
fun main(){
fun Circle.perimeter(): Double{ // Vehicle ক্লাসের জন্য এক্সটেনশন ফাংশন তৈরী করা হয়েছে।
return 2(height+width);
}
val mycar= Vehcile(5); // Vehicle ক্লাসের জন্য অবজেক্ট ব্যবহার করা হয়েছে।
println("Area of the Vehicle ${newCircle.area()}") // Vehicle ক্লাসের area() ফাংশন ব্যবহার করা হয়েছে।
println("Perimeter of the Vehicle ${newCircle.perimeter()}")// এক্সটেনশন ফাংশন ব্যবহার করা হয়েছে।
এই উদাহরণে, আমরা Vehicle
ক্লাসের area()
ফাংশন ব্যবহার করার পর আবার Vehicle
ক্লাসের radius
অবজেক্ট ব্যবহার করে নিজেদের এক্সটেনশন ফাংশন perimeter()
তৈরী করা হয়েছে। এতে আমাদের Vehicle
ক্লাসের অবজেক্ট ব্যবহার করার জন্য কোন চাইল্ড ক্লাস তৈরী করতে হলোনা, একটি এক্সটেনশন ফাংশন দিয়েই কাজ হয়ে গেল। এক্সটেনশন ফাংশনের জন্য কোড ছোট এবং পরিষ্কার হয়ে গেল যা সহজে বোঝা যায়।
নাল পয়েন্টার ইরর
জাভাতে আপনি সহজে যেকোনো ভ্যারিয়েবল (চলক) এর মান Null
(মানে কিছু নেই) দিতে পারেন কম্পাইল করার সময়েে। কিন্তু, যখন আপনি কোন অবজেক্ট এর রেফারেন্স ব্যবহার করতে যাবেন (রান টাইম এ) যার মান নাল, তাহলে আপনার কোডে NullPointerException
ইরর দেখাবে।
উদাহরণ –
Object car = null; //এখানে একটি object তৈরী করা হয়েছে car নামে, যার মান null।
car.toString(); // toString() মেথড কোন অবজেক্ট কে স্ট্রিং রুপে প্রকাশ করে।
উপরোক্ত কোডে NullPointerException
ইরর দেখাবে। কারন, আমরা, car
অবজেক্ট কে স্ট্রিং রুপে প্রকাশ করতে চেয়েছি যার মান হল null
। অর্থাৎ, জাভাতে কম্পাইল টাইম এ null
ইরর দেখাবে না (কিন্ত রান টাইম এ ইরর আসবে)।
কটলিন এ এই সমস্যা আপনি দেখতে পাবেন না। কটলিনে সব অবজেক্ট/ভ্যারিয়েবল এর মান non-nullable
ভাবে সংজ্ঞায়িত করতে পারবেন, মানে কোন কিছুর মান নরমালি নাল হতে পারবে না। ফলে রান টাইমে গিয়ে NullPointerException
ইরর এ পরার কোনো সম্ভাবনা নেই।
ডেটা স্টোরিং যেভাবে করতে হয়
জাভাতে যদি আমরা কোনো ডেটা স্টোর করতে চাই, তবে এর জন্য কোনো ক্লাস ডিক্লেয়ার করা হলে তার মধ্যে আমাদের কাজের সুবিধার জন্য কন্ট্রাক্টর, ভ্যারিয়েবল, গেটার এবং সেটার মেথড, hashcode(), toString(), equal()
ডিক্লেয়ার করে নিতে হয়।
constructor()
– অবজেক্ট ইনিশিয়ালাইজ করার জন্য ব্যবহার করার হয়।Getter
এবংSetter methods
– কোন ভ্যারিয়েবল পুনরায় ব্যবহার করার জন্য ও ভ্যালু পরিবর্তন করার জন্য ব্যবহার করা হয়।toString()
– কোন অবজেক্টকে স্ট্রিং রুপে প্রকাশ করার জন্য ব্যবহার করার হয়।
কটলিনে এই সব মেথড লেখার কোন প্রয়োজন নেই। কটলিনে কোন ডেটা স্টোর ক্লাস বানানোর জন্য ক্লাসের নামের আগে “data
” কি-ওয়ার্ড ব্যবহার করলেই হয়ে যায়।
data class human(val name: String, val age: Int)
উপরোক্ত কটলিন কোডে আমরা human নামের একটি “data
” ক্লাস বানিয়েছি শুধুমাত্র class human
এর আগে “data
” কি-ওয়ার্ড ব্যবহার করা হয়েছে । ফলে কটলিন এখন বুঝে গিয়েছে এই ক্লাসটি একটি ডেটা ক্লাসের। তাই কটলিন নিজে নিজেই equals(), toString(), copy(
) – এরকম ফাংশন অটোমেটিক্যালি কল করে।
ভেরিয়েবল ডিক্লেয়ার করা
জাভাতে ভ্যারিয়েবল ডিক্লেয়ার করার সময় ভ্যারিয়েবলের নামের আগে, এটি কোন টাইপের ভ্যারিয়েবল তা উল্লেখ করে দিতে হয়। যেমন –
int number = 5; // number একটি ভেরিয়েবল যা একটি পূর্ণসংখ্যা টাইপের।
String name= ‘Projuktir Avijatri’;// name একটি ভেরিয়েবল যা একটি স্ট্রিং টাইপের
কটলিনে সুবিধা হলো, আমাদেরকে ভ্যারিয়েবল টাইপ উল্লেখ করতে হয় না, ভ্যারিয়েবল ডিক্লেয়ার করার সময়। কটলিন নিজে থেকেই বুঝে নেয় কি টাইপের ভ্যারিয়েবল ডিক্লেয়ার করা হয়েছে। যেমন:
var name = "Projuktir Avijatri"
উপরোক্ত কটলিনের কোডে একটি ভ্যারিয়েবল তৈরী করেছি যার নাম name কিন্তু আমরা name
কোন টাইপের ভ্যারিয়েবল তা ডিক্লেয়ার না করা সত্ত্বেও, কটলিন সহজেই বুঝে নিয়েছে যে name একটি স্ট্রিং ভ্যারিয়েবল। এখানে name
এর ভ্যালু হিসেবে একটা স্ট্রিং ভ্যালু “Projuktir Avijatri
” ব্যবহার করা হয়েছে।
কটলিন কোড জাভার সাথে কম্পিটেবল
কটলিন এর কোড সহজেই জাভা কোড এর সাথে কাজ করতে পারে। যেকোনো জাভা ফ্রেমওয়ার্ক, লাইব্রেরির সাথে কটলিন কম্পিটেবল। ফলে, জাভার কোড কটলিন এর প্রজেক্টে সহজেই ব্যবহার করা যায় ।
ক্যারিয়ার
জাভা যতোই পুরনো আমলের প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ হোক না কেনো, এর মার্কেট ভ্যালু এখনো বিদ্যমান এবং ভবিষ্যতেও থাকবে বলে সকলেই আশা করেন। কিন্তু বর্তমান সময়ে কটলিনের চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। আবার নির্ভর যোগ্যতার দিক থেকে জাভা কটলিন থেকে অনেকটা এগিয়ে।
এন্ড্রয়েড অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট এর জন্য গুগল যেহেতু কটলিনকে বেছে নিয়েছে তাই ডেভেলপার গণ দিন দিন জাভা থেকে কটলিনে নিজেদের অ্যাপ গুলোকে মাইগ্রেট করছে। এতে আমরা সহজেই নতুন এই প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ এর গুরুত্ব খুব ভালোভাবেই অনুধাবন করতে পারি।
সবশেষে দু’টি কথা,
প্রথমত, এন্ড্রয়েড অ্যাপ্লিকেশন ডেভেলপ করার জন্য গুগল কটলিনকে প্রাধান্য দিচ্ছে। তার মানে, যেসব কোম্পানি এন্ড্রয়েড অ্যাপ্লিকেশন তৈরি করে থাকে, তারা কটলিন ডেভেলপার খুঁজবে। যার ফলে কটলিনের স্কিল থাকাটা একটা বাড়তি সুবিধা দিবে চাকরির বাজারে।
দ্বিতীয়ত, কটলিন একটি অন্যতম বৃহৎ প্রযুক্তিভিত্তিক কোম্পানির (গুগল) হাতিয়ার হয়ে গেছে। ফলে, কটলিন এর জ্ঞান অবশ্যই আপনার সিভি (Resume
) ভারি করে তুলবে।
যা বুঝা যাচ্ছে যে, কটলিনের জনপ্রিয়তা দিন দিন বাড়ার সম্ভবনাই বেশি। তাই, কটলিন শিখে রাখাটা মন্দ হবে না বলে মনে হচ্ছে। তাছাড়া, যেকোনো স্কিলই কোন না কোন ভাবে মানুষের কাজে আসেই। হোক, সেটা প্রত্যক্ষ ভাবে, বা পরোক্ষভাবে।