অপারেটিং সিস্টেম কম্পিউটারের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সফটওয়্যার। এটি কম্পিউটার ব্যবহারকারী এবং কম্পিউটার হার্ডওয়্যারের মধ্যে সংযোগ স্থাপনে কাজ করে থাকে।
আধুনিক কম্পিউটার অপারেটিং সিস্টেমের কাজ অবশ্য শুধু এতটুকুই নয়। আধুনিক অপারেটিং সিস্টেম এর কাজ, কার্যপ্রণালী এবং বৈশিষ্ট্য বেশ জটিল। সংক্ষেপে, অপারেটিং সিস্টেম হার্ডওয়্যার রিসোর্সের (যেমন মেমরি, প্রসেসর, স্টোরেজ প্রভৃতির) ব্যবস্থাপনা ও নিরাপত্তার কাজ করে থাকে।
অপারেটিং সিস্টেমের কাজকে প্রধানত ৪ ভাগে বিভক্ত করা যায় –
১) প্রসেস ব্যবস্থাপনাঃ যেকোন প্রোগ্রামের চলমান অবস্থাকে প্রসেস বলে। আধুনিক কম্পিউটারে একই সময় একাধিক প্রসেস চলমান থাকে। কিন্তু প্রসেসর সাধারনত সিরিয়াল ডিভাইস হওয়ায়, একই সময় শুধুমাত্র একটি প্রসেস এর কাজ করতে পারে। অপারেটিং সিস্টেম নিয়ন্ত্রণ করে কখন কোন প্রসেস, প্রসেসর ব্যবহার করতে পারবে।
২) মেমরি ব্যবস্থাপনাঃ কম্পিউটারের মেমরি বা র্যাম অত্যন্ত দ্রুতগতিসম্পন্ন। কোনো প্রসেস রান করার সময় তা প্রয়োজনীয় ফাইল স্টোরেজ (হার্ড ড্রাইভ/HDD, সলিড স্টেট ড্রাইভ/SSD) থেকে মেমরিতে লোড করে নেয়। অপারেটিং সিস্টেম নিয়ন্ত্রণ করে কোন প্রসেস মেমরিতে কোথায় কতখানি জায়গা ব্যবহার করতে পারবে।
৩) স্টোরেজ ব্যবস্থাপনাঃ অপারেটিং সিস্টেম স্টোরেজ ড্রাইভকে ব্যবহারকারীর সুবিধার্থে ফাইল হিসেবে তথ্য উপস্থাপন করে। ফাইলটি স্টোরেজ এর কোথায় এবং কিভাবে সংরক্ষিত থাকে, তা অপারেটিং সিস্টেম নিয়ন্ত্রণ করে।
৪) সুরক্ষা ও নিরাপত্তাঃ অপারেটিং সিস্টেম কম্পিউটারের সুরক্ষা নিশ্চিত করে থাকে। কোন প্রসেস যেন অন্য কোন প্রসেস বা সিস্টেমের অন্যান্য কার্যক্রমে ব্যাঘাত ঘটাতে না পারে, অপারেটিং সিস্টেম তা নিশ্চিত করে থাকে।
অপারেটিং সিস্টেম এর গঠন –
অপারেটিং সিস্টেমের গঠন খুবই জটিল এবং একেক অপারেটিং সিস্টেমের গঠন একেক রকম হয়ে থাকে। তবে সাধারনত কিছু জিনিস সব অপারেটিং সিস্টেমেই থাকে।
- কার্নেলঃ কার্নেল অপারেটিং সিস্টেমের প্রাণ। হার্ডওয়্যারের সাথে সরাসরি ইন্টারএক্ট (Interact) করে কার্নেল। এছাড়া অপারেটিং সিস্টেমের মূল কাজগুলো কার্নেলই সম্পন্ন করে থাকে।
- সিস্টেম লাইব্রেরীঃ সাধারনত কোন প্রোগ্রাম সরাসরি কার্নেল এর ফিচার ব্যবহার করতে পারে না। সিস্টেম লাইব্রেরীতে নিরাপদ কিছু ফাংশন ও প্রোগ্রাম থাকে যার মাধ্যমে অন্যান্য প্রোগ্রাম কার্নেল এর ফিচার ব্যবহার করে কাজ করতে পারে।
- শেলঃ ব্যবহারকারী শেল কমান্ড এর মাধ্যমে সিস্টেম লাইব্রেরী ব্যবহার করে সরাসরি কার্নেলের ফিচার ব্যবহার করতে পারে।
- ইউজার ইন্টারফেসঃ অপারেটিং সিস্টেম এর সাথে ইন্টারএক্ট (Interact) করার সুবিধার্থে ব্যবহারকারীর জন্য যেই ইন্টারফেস থাকে, সেটিই ইউজার ইন্টারফেস। ইউজার ইন্টারফেস সাধারনত দুইরকম হতে পারে।
- কমান্ড লাইন ইন্টারফেস (CLI)
- গ্রাফিকাল ইউজার ইন্টারফেস (GUI)
- সিস্টেম ইউটিলিটি প্রোগ্রামঃ সাধারনত অপারেটিং সিস্টেম এর সাথে কিছু ইউটিলিটি প্রোগ্রাম থাকে যা অপারেটিং সিস্টেম কনফিগার ও ব্যবস্থাপনায় ব্যবহার করা হয়।
অপারেটিং সিস্টেমভেদে কাজ ও গঠন ভিন্ন হতে পারে। যেমনঃ স্মার্টফোন অপারেটিং সিস্টেম ‘এন্ড্রয়েড’ অপারেটিং সিস্টেমে অ্যাপ্লিকেশন প্রোগ্রাম একটি ভার্চুয়াল এনভায়রনমেন্ট (Virtual environment) এ রান করে।
এখানে সকল অপারেটিং সিস্টেমেই সাধারনত যা থাকে, সেই বিষয়গুলো নিয়ে সংক্ষেপে আলোচনা করার চেষ্টা করা হয়েছে। আশাকরি ধারাবাহিক ভাবে আরো কিছু লেখা প্রকাশ হলে অপারেটিং সিস্টেম বিষয়ক বিশদভাবে জানা যাবে।